Header Ads

স্বাস্থ্য সেবা



 👉রেক্টাল ক্যানসারের লক্ষণ ও চিকিৎসা।


রেক্টাল ক্যানসার হলো বৃহদন্ত্রের শেষ অংশ- অর্থাৎ রেক্টাম বা মালদ্বার- এই উপপন্ন হওয়া এক ধরনের মরণব্যাধি।এটি কোলোরেক্টাল ক্যানসারের একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিশ্বব্যাপী ক্যানসারজনিত মৃতু্যর অন্যতম প্রধান কারণ এই রোগ।তবে আধুনিক উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে এর নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
রেক্টাল ক্যানসার (Rectal Cancer) হলো মলদ্বারের (rectum) অস্বাভাবিক ক্যান্সারযুক্ত কোষের বৃদ্ধি। এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের একটি সাধারণ ধরনের ক্যানসার। নিচে রেক্টাল ক্যানসারের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য দেওয়া হলো:

রেক্টাল ক্যানসারের লক্ষণ (Symptoms)

১. রক্তপাত: মলত্যাগের সময় রক্ত পড়া (মলদ্বার থেকে রক্তপাত), যা সাধারণত গাঢ় লাল রংয়ের হতে পারে।
২. মলাশয় পরিবর্তন: মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন, যেমন ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, বা মলের আকার পরিবর্তন।

৩. পেটের ব্যথা ও অস্বস্তি: অন্ত্রের নিচের অংশে ব্যথা বা চাপ অনুভূত হওয়া।
৪. মলাশয়ের আঘাত: মলদ্বারের আংশিক বাধা বা পেষণ।
৫. অজানা ওজন কমা: শরীরের ওজন হঠাৎ কমে যাওয়া।
৬. জ্বর বা দুর্বলতা: শরীরের অন্যান্য সমস্যা যেমন ক্লান্তি, দুর্বলতা বা জ্বর হতে পারে।
৭. মলত্যাগের সময় অস্বস্তি: ব্যথা বা জ্বালা অনুভব হতে পারে।

💓রেক্টাল ক্যানসারের চিকিৎসা (Treatment)

রেক্টাল ক্যানসারের চিকিৎসা সাধারণত রোগের ধাপ এবং রোগীর স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি হলো:

১. সার্জারি (Surgery):

  • ক্যান্সার আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা হয়।

  • কখনো কখনো মলদ্বারের অংশ বা সম্পূর্ণ মলদ্বার অপসারণ করা হতে পারে (abdominoperineal resection)।

২. কেমোথেরাপি (Chemotherapy):

  • ক্যান্সার কোষ ধ্বংসের জন্য ঔষধ ব্যবহার।

  • অপারেশনের আগে বা পরে দিতে পারে।

৩. রেডিয়েশন থেরাপি (Radiation Therapy):

  • ক্যান্সার কোষকে ছোট করার বা অপারেশনের আগে/পরে প্রদাহ কমানোর জন্য।

  • মলদ্বারের ক্যান্সারে প্রায়ই ব্যবহার করা হয়।

৪. টার্গেটেড থেরাপি ও ইমিউনোথেরাপি:

  • নির্দিষ্ট ক্যান্সার কোষের লক্ষ্যে আধুনিক ওষুধ ব্যবহার।

পরামর্শ

  • যেকোনো অনিয়মিত লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

  • নিয়মিত স্ক্রীনিং ও পরীক্ষা করানো জরুরি, বিশেষ করে যারা উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন।




কারণগুলো?


রেক্টাল ক্যানসারের কারণগুলো একাধিক হতে পারে, তবে নিচে প্রধান কিছু কারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ফ্যাক্টর তুলে ধরা হলো:


🔹 রেক্টাল ক্যানসারের কারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ফ্যাক্টরসমূহ

১. আনুবংশিকতা (Genetics / Family History)

  • পরিবারে যদি কারও কোলন বা রেক্টাল ক্যানসার থাকে, তাহলে ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

  • Hereditary syndromes যেমন:

    • Lynch syndrome (HNPCC)

    • Familial adenomatous polyposis (FAP)

২. বয়স (Age)

  • ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মাঝে এই ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি থাকে, তবে বর্তমানে কম বয়সীদের মধ্যেও এর প্রকোপ বাড়ছে।

৩. খাদ্যাভ্যাস (Dietary Factors)

  • বেশি লাল মাংস বা প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলে ঝুঁকি বাড়ে।

  • কম ফাইবারউচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার সঙ্গে এই ক্যানসারের সম্পর্ক রয়েছে।

৪. পেশাগত বা পরিবেশগত কারণ

  • দীর্ঘদিন ধরে রাসায়নিক বা বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।

  • ধূমপান এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ।

৫. আঁতুর পলিপ (Colon/Rectal Polyps)

  • কিছু পলিপ (বিশেষ করে অ্যাডেনোমাটাস টাইপ) ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।

৬. আন্ত্রিক রোগ (Chronic Inflammatory Bowel Disease)

  • Ulcerative colitis এবং Crohn's disease রোগীদের ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি।

৭. স্থূলতা ও জীবনধারা (Obesity & Sedentary Lifestyle)

  • ওজন বেশি ও শরীরচর্চার অভাবে ঝুঁকি বাড়ে।

৮. ডায়াবেটিস ও ইনসুলিন রেজিস্টেন্স

  • টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের মাঝেও এ ক্যানসারের ঝুঁকি কিছুটা বেশি।


🛡️ প্রতিরোধমূলক করণীয়:

  • ফাইবারযুক্ত খাবার খান (সবজি, ফল, শস্য)।

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

  • ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন।

  • নিয়মিত স্ক্রীনিং করুন, বিশেষ করে যদি পরিবারে ইতিহাস থাকে।

আপনার যদি পারিবারিক ইতিহাস থাকে বা উপরের কোনও ঝুঁকি ফ্যাক্টর প্রযোজ্য হয়, তাহলে দ্রুত একজন গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট বা অনকোলজিস্টের পরামর্শ নেয়া উচিত।





লক্ষণগুলো কি কি?


রেক্টাল ক্যানসারের সাধারণ এবং প্রাথমিক লক্ষণ (Symptoms) গুলো নিচে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:


🔍 রেক্টাল ক্যানসারের লক্ষণসমূহ

১. মলের সাথে রক্তপাত (Rectal Bleeding)

  • মলের সাথে উজ্জ্বল বা গাঢ় লাল রক্ত দেখা যেতে পারে।

  • অনেক সময় রক্তপাত ধীরে ধীরে হয়, ফলে রোগী বুঝতেও পারে না।

২. মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন (Change in Bowel Habits)

  • ডায়রিয়া (পাতলা পায়খানা)

  • কোষ্ঠকাঠিন্য (কঠিন মলত্যাগ)

  • বারবার পায়খানার অনুভূতি, কিন্তু যাওয়ার পরও আরাম না পাওয়া।

৩. মলের আকার ও রঙ পরিবর্তন

  • মল চিকন বা ফিতা আকৃতির হতে পারে।

  • গাঢ় রঙের মল (যা রক্তের কারণে হতে পারে)।

৪. পেটের ব্যথা বা অস্বস্তি (Abdominal Discomfort or Cramping)

  • পেটে চাপ, ব্যথা বা ফুলে যাওয়ার অনুভূতি।

৫. ওজন হ্রাস (Unintentional Weight Loss)

  • হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই।

৬. দুর্বলতা ও ক্লান্তি (Fatigue and Weakness)

  • শরীরে শক্তি কমে যাওয়া, সহজে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া।

৭. আনুভূমিক বা অসম্পূর্ণ মলত্যাগের অনুভূতি

  • মনে হয় পায়খানা সম্পূর্ণ হয়নি, আবার যাওয়ার ইচ্ছা হয়।

৮.মলদ্বার বা নিচের পেটে চাপ

  • কখনো কখনো টিউমার এত বড় হয় যে মলদ্বারে চাপ দেয় এবং অস্বস্তি তৈরি করে।

⚠️ লক্ষণগুলো কখনো ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং অনেক সময় অন্য রোগের মতো মনে হতে পারে (যেমন পাইলস বা আইবিএস)।

তাই উপরের কোন লক্ষণ দীর্ঘদিন থাকলে (বিশেষ করে রক্তপাত ও অভ্যাসে পরিবর্তন) অবহেলা না করে একজন ডাক্তার/অনকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পরীক্ষা বা ইনভেস্টিগেশন?


রেক্টাল ক্যানসার নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা ও ইনভেস্টিগেশন করা হয়। প্রধান প্রধান পরীক্ষা গুলো হলো:

রেক্টাল ক্যানসার নির্ণয়ের পরীক্ষা ও ইনভেস্টিগেশন

  1. ডিজিটাল রেক্টাল এক্সামিনেশন (DRE)

    • ডাক্তার আঙুল দিয়ে মলদ্বার পরীক্ষা করেন। এতে টিউমার বা গঠনের অবস্থান ও আকার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়।

  2. কলোনোস্কপি (Colonoscopy)

    • একটি পাতলা, নমনীয় টিউব যার শেষে ক্যামেরা থাকে, তা মলদ্বার থেকে প্রবেশ করিয়ে পুরো কোলন ও রেক্টাম দেখা হয়। টিউমার থাকলে সেটি সেখান থেকে বায়োপসি (টিস্যু নমুনা) নেওয়া হয়।

  3. বায়োপসি (Biopsy)

    • কলোনোস্কপির সময় টিউমার থেকে টিস্যু সংগ্রহ করে মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসার সনাক্ত করা হয়।

  4. কোলনোগ্রাফি বা সিগময়েডস্কোপি

    • এটি কলোনোস্কপির বিকল্প, যেখানে কেবলমাত্র রেক্টাম এবং সিগময়েড অংশ পরীক্ষা করা হয়।

  5. ইমেজিং টেস্ট

    • সিটি স্ক্যান (CT Scan): ক্যানসার কেমন ছড়িয়েছে এবং লিম্ফ নোড বা অন্যান্য অঙ্গ আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য।

    • এমআরআই (MRI): বিশেষ করে রেক্টাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে, টিউমারের গভীরতা ও আশেপাশের টিস্যু সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে।

    • পিইট-সিটি (PET-CT): শরীরে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তা জানার জন্য।

  6. ব্লাড টেস্ট

    • রক্তে কিছু বিশেষ মার্কার (যেমন CEA — Carcinoembryonic Antigen) পরীক্ষা করা হয়, যা ক্যানসারের ক্ষেত্রে বাড়তে পারে।

এই সব পরীক্ষা মিলিয়ে রোগের ধাপ নির্ধারণ করা হয় (স্টেজিং) এবং তার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসার পরিকল্পনা গঠন করা হয়।



চিকিৎসা?






প্রতিরোধ সচেনতা?







উপসৎহার?

No comments

Powered by Blogger.